উনিশে হাফ, একুশে সাফ- তৃণমূলের দুর্গ গুঁড়িয়ে দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে নবঘাঁটি গড়ে তোলার এ অভিপ্রায় ভারতের কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকা বিজেপির। গতকাল দলটির শীর্ষ নেতা, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গে সফরে গিয়ে সেই কথাই ফের অভিব্যক্ত করলেন। মেদেনীপুরে অমিত শাহ বলেন, বাংলা হবে বিজেপির। গড়ে তোলা হবে সত্যিকারের সোনার বাংলা। এনডিটিভি।
শনিবার পশ্চিমবঙ্গ সফর শুরু করেন অমিত। এ সফর যেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসের মূলে কুড়ালাঘাত। মেদিনীপুরে অমিতের উপস্থিতিতে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীসহ সাত বিধায়ক। সভা থেকে তীব্র ভাষায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেন অমিত। তিনি বলেন, ‘বাংলায় রাজনৈতিক সংস্কৃতি পাল্টেছে। বাংলায় ভয়ের রাজনীতি চলছে। বিজেপি ভয় পায় না। মমতাকে হারাবে বিজেপির বঙ্গ ইউনিট। মুখ্যমন্ত্রী হবে বাংলার মানুষ। বাংলার পরিবর্তন নিতান্ত প্রয়োজন।’
অমিত শাহ অভিযোগ করেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তাকে ভয় পান মমতা। সেই ভয়ে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করেননি। ফলে কৃষকরা বঞ্চিত হয়েছে।
অমিত তার বক্তব্যে পরোক্ষ হুমকি দিয়ে বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলকে উপড়ে না ফেললে কেন্দ্রীয় তহবিল পাওয়া যাবে না। এটা তৃণমূলের বিদায়ের শুরু।’
অমিত বলেন, ‘দিদি কান খুলে শুনে রাখুন, বিজেপি বাংলায় সরকার গড়বেই। ২০০টির বেশি আসনে জয়লাভ করে বাংলায় বিজেপি সরকার গড়বে। বাংলার উন্নয়ন হবে। সোনার বাংলা গড়ে তোলা হবে।’
তৃণমূল থেকে বিজেপিতে নেতাকর্মীদের যোগদানের ব্যাপারে অমিত দাবি করেন, তৃণমূল ত্যাগের এ জোয়ার এখন চলতেই থাকবে। নির্বাচনের সময় তৃণমূলে একাই থাকবেন মমতা। তিনি দলটির একমাত্র নেতা ও একমাত্র কর্মী হিসেবে থেকে যাবেন। আর আগামী নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের ২৯৪ আসনের মধ্যে ২০০টিই জিতে নেবে বিজেপি। অবশ্য অমিতকে কটাক্ষ করে তৃণমূল নেতারা বলছেন, একজন শুভেন্দুকে ভাগিয়েই এতো আসন দাবি করছে বিজেপি।
তৃণমূল নেতা ও পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখার্জি বলেন, ‘শুভেন্দুর দলবদলের কিছু কিছু সংবাদ আমাদের কাছে আগেও ছিল। তাই আমরা তাতে হতবাক হইনি। কেউ কেউ গেল গেল রব তুলেছেন। আমরা সেটা মনে করি না। আমাদের একজন নেত্রী আছেন, যার নাম মমতা ব্যানার্জি। মমতার জনপ্রিয়তাই আমাদের শক্তি। আর আমাদের দল না হয় সরকারে আছে। কিন্তু দীর্ঘদিন সরকারে নেই কংগ্রেস ও সিপিএম। তাদের দল থেকেও কয়েকজন চলে গিয়েছেন। এটা একটা রাজনৈতিক অসুখ।একটা শুভেন্দুকে নিলে কোনো ক্ষতি হবে না।’
সুব্রত মুখার্জি বলেন, ‘আমরা এটাকে রাজনৈতিক চলে যাওয়া নয়, বলি বিশ্বাসঘাতকতা। এ বিশ্বাসঘাতকদের দলকে বাংলার মানুষ চিনে নেবে।’
Leave a Reply